সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই

প্রিয় পাঠক, আপনারা কি সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই তা কি জানেন। যদি না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেল মনোযোগ সহ পড়ুন। কেননা আজ আমরা এই আর্টিকেলে সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই এবং সালাত কেন আদায় করতে হয় এই সকল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। অর্থাৎ আপনি যদি সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই তা জানতে চান তাহলে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই

মুসলমান জাতিদের জন্য নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা নামাজ হচ্ছে বেহেস্তের চাবি। নামাজের মাধ্যমে মুমিন বান্দা একজন আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হওয়া যায়। কেননা নামাজ মানুষকে নিষ্পাপ করে তোলে।

পোস্ট সূচিপত্রঃসালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই

সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই?;ভূমিকা

নামাজ কায়েম করা হচ্ছে আল্লাহর হুকুম মুসলমানদের এবং ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য ফরজ হুকুম। নামাজ পড়ার মাধ্যমে সেটা আখিরাত এবং ইহকাল দুটোই কল্যাণময় করে তুলতে পারে। কারণ নামাজ পড়ার মাধ্যমে সে একজন আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হওয়ার চেষ্টা করে।আর তখন সে নিষ্পাপ হয়ে যায়।

 আর তখন আমাদের জানা উচিত যে সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই এবং আমাদেরকে সালাত কেন আদায় করতে হয় এই সকল সম্পর্কে আমরা আজ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। অর্থাৎ আপনার যদি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান এবং জেনে আপনাদের জীবনের খারাপ আমলনামাকে বদলিয়ে ভালো আমল নামায় পরিবর্তন করতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহ পড়ুন।

সালাত কেন আদায় করতে হয়

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার গোলামী ও দাসত্ব করার জন্য। এজন্য তিনি আমাদেরকে সালাত আদায় করার জন্য আমাদের ওপর এটি ফরজ করেছেন। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম মেরাজের রাতে জিবরাঈল আঃ এর মাধ্যমে আল্লাহর আরশে বসে তিনি তার উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নির্ধারিত ও ফরজ করে নিয়ে আসেন।

আরো পড়ুনঃ কোমর ব্যথায় ভুগছেন ভাবে মুক্তির উপায়

মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বর্ণিত করেছেন যে, আমি তোমাদের জন্য নামাজ ফরজ করলাম এবং এটি তোমাদের মুক্তির পথ। আমার রহমত লাভের জন্য তোমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ো এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকো। কেননা যারা আল্লাহর রহমতের আশায় নামাজ আদায় করে তারা কখনো পাপাচার এবং পাপ কাজ করতে পারে না। তখন সে একজন প্রকৃত মুমিন বান্দা হয়ে ওঠে। আর মুমিন বান্দাকে আল্লাহ সর্বদা সম্মানের জায়গায় রাখেন। সে ইহকাল ও পরকালে সম্মানের অধিকারী হয়ে থাকবেন।

আর আমরা যারা সালাত আদায় করি না এবং পাপা যার কাছ থেকে বিরত থাকতে পারিনা। তাদেরকে সমাজে কেউ বিশ্বাস করে না এবং ভালোবাসে না ও সব সময় তাদের মানুষজন খারাপ চোখে দেখে এবং তাদেরকে সর্বদা ঘৃণা করে থাকে। এবং আল্লাহর রহমত তাদের উপর আসে না এজন্য সে পৃথিবীতে যেরকম বিপদ আপদ এর মুখোমুখি হবে।তেমনি সে পরকালে কবরের আজাব থেকে শুরু করে জাহান্নামের আজাব যার পাবে যার কোন শেষ নেই। এই আজাব অফুরন্ত। তাই আমাদের সকলেরই উচিত সালাত আদায় করা।

সালাত আদায়ের উপকারিতা

যারা আমরা সালাত আদায় করি তারা সকলে আল্লাহর গোলামী ও দাসত্ব এবং তাকে খুশি করার জন্য সালাত আদায় করে থাকি। আর এই সালাত যারা আদায় করে থাকি আমরা সকল সময় আল্লাহর মুমিন বান্দা হওয়ার জন্য ভালো কাজে লিপ্ত হয়ে থাকি সকল পাপ কাজ ও পাপাচার থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিয়ে আসি। একজন মুমিন বান্দা হওয়ার জন্য সালাত আদায় করা ছাড়া আরও সকল ভাল কাজ করতে হয়। আমাদের হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ছিলেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী, এজন্য তাকে সকলে বিশ্বাস করতেন এবং আল আমিন বলে ডাকত সকল লোকজনে আল আমিন এর অর্থ হচ্ছে বিশ্বাসী।

আমরা যখন আল্লাহর গোলামী ও দাসত্ব করার জন্য সালাত আদায় করবো তখন আল্লাহতালা আমাদের ওপর খুশি হন। এবং আল্লাহর সকল রহমত আমাদের উপর নাযিল করেন। তখন আমাদের এই পৃথিবী আমাদের জন্য সুখময় ও শান্তির জায়গা হয়ে ওঠে। তেমনি পরকালে আল্লাহর হুকুমে আমাদের কবর এবং পরকালের সমস্ত জীবন সুখময় ও শান্তির হবে। তখন আমরা জাহান্নামের এবং কবরের সকল থেকে মুক্তি পাবো।

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর হুকুমে বলেছেন যে নামাজ হলো বেহেস্তের চাবি। তাই আমরা যদি বেহেস্তে যেতে চাই তাহলে আমাদের সর্বপ্রথম নামাজ পড়তে হবে। কেননা কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের কাছ থেকে নামাজের হিসাব চাইবেন।

সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই

সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই নিচে তার বর্ণনা করা হলোঃ

  • সঠিকভাবে আমরা সালাত আদায় করলে মহান আল্লাহতালার ইবাদত করা ও গোলামী ও দাসত্ব করার হক আদায় করার সুফল পায়।
  • মহান আল্লাহতালার রহমত লাভ করি।
  • সালাত পড়ার মাধ্যমে হেদায়েত লাভ করি।
  • সালাত পড়ার মাধ্যমে নিজেদের জ্ঞান চর্চা করতে পারি।
  • সালাত আদায়ের মাধ্যমে নিজেদের পাপ ও পাপাচার পথ থেকে সরিয়ে আনতে পারি।
  • সালাত আদায় করার মাধ্যমে নিজেদেরকে ভালো কাজে লিপ্ত করতে পারি।
  • সালাত আদায়ের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তালার দেখানো পথে এবং তার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেখানো পথ অনুসরণ করে চলতে পারি।
  • সালাত আদায়ের ফলে সমাজের সকল ভালো কাজে নিজেদেরকে লিপ্ত করতে পারি এবং সম্মানের অধিকারী হতে পারি।
  • সালাত আদায়ের মাধ্যমে অন্যের কাছে বিশ্বাসের পাত্র ও বিশ্বাসী হতে পারেন।
  • সালাত আদায়ের ফলে সকল ভাল কাজ করে সেই সকল নেক আমল দ্বারা একজন মুমিন বান্দা হতে পারি। তখন আমরা আল্লাহর প্রকৃত বান্দা ও গোলাম হতে পারব।
  • সমাজের সকল ব্যক্তি ও বর্গের কাছে ভালোবাসার পাত্র হয়ে উঠতে পারবো। এবং সমাজের সবচেয়ে সম্মানী ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারবো।
  • সালাত আদায়ের জন্য ইহকালে যেমন সম্মানের অধিকারী হতে পারব সেরকমই পরকালেও উচ্চ সম্মানের ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারবো।
  • সালাত আদায়ের ফলে আমরা কবরের সকল আজাব থেকে রক্ষা পাব।
  • কিয়ামতের দিন সেই সকল কষ্ট থেকে রেহাই পাব।
  • সালাত আদায়ের ফলে যখন হেদায়েত লাভ করব তখন আমরা আমাদের পিতা-মাতার খেদমত করতে পারব।
  • সালাত আদায়ের জন্য আমরা পুলসিরাতের পুল সঠিকভাবে পার হতে পারব।
  • জাহান্নামের সকল আজাব থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবো।
  • সালাত আদায় করলে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব চাইলে তার জবাব দিতে পারব।
  • সালাত আদায়ের মাধ্যমে জান্নাত লাভ করতে পারব। এবং সেই দিন উচ্চ সম্মানের অধিকারী হতে পারব।

নামাজের দুনিয়াবি উপকারিতা

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ জামানার নবী,তিনি আখেরি নবী তার মাধ্যমেই নবুয়তের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। তিনি মহান আল্লাহর পরে অসীম দয়ালু একজন নবী ছিলেন তিনি তার উম্মতের জন্য মহান আল্লাহর কাছে মেরাজের রাতে জিব্রাইল (আঃ) এর মাধ্যমে আল্লাহর নিকটে এগিয়ে আমাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দিয়ে আসেন। কারণ এই নামাজের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের দুনিয়ার সকল সমস্যার সমাধান এবং মহান আল্লাহর রহমত আমাদের ওপর নিয়ে আসতে পারি।

আমরা যখন নামাজ আদায় করি তখন আমাদের পৃথিবীর সকল দুনিয়াবী সমস্যার সমাধান আল্লাহর নিকটে তুলে ধরতে পারি তখন আল্লাহর রহমত আমাদের ওপর নাযিল হয়। এবং দুনিয়াবী সকল পাপাচার কাছ থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারি এবং সকল ভাল কাজে নিজেদেরকে লিপ্ত হতে পারি। মহান আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর ঈমান আনে তাদের হৃদয় আমার স্মরণে প্রশান্ত এবং শান্তিময় হয়। একমাত্র নামাজ দাঁড়ায় আল্লাহর হেদায়েত লাভ করা যায়।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম ২০২৩

নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমরা প্রকৃত মুমিন ও ঈমানদার বান্দা হয়ে উঠতে পারি মহান আল্লাহতালা এরশাদ করেছেন, নামাজ অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে (সূরা আনকাবুত ৪৫) কারণ একমাত্র নামাজই পারে মানুষকে খারাপ পথ থেকে ভালো পথে নিয়ে আসতে অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে ও সুদ ঘুষ ও খুন-খারাপি এবং জুলুম করা থেকে বিরত রাখতে নামাজ সাহায্য করে। এর ফলে আমাদের দুনিয়া সুখময় ও শান্তিময় হয়ে ওঠে এবং পরকাল সুখময় ও শান্তির হয়ে উঠবে

জামাতে সালাত আদায় করলে কত গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়

মহান আল্লাহ তাআলার হুকুমে আমাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়েছে। তবে আমরা চাইলে বাড়িতেও এমনকি যে কোন জায়গায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে নামাজ আদায় করতে পারি। তবে কোরআনে বর্ণিত রয়েছে যে, আমরা যদি মসজিদে জামাতের সঙ্গে সালাত আদায় করি তাহলে অন্য নামাজের থেকে জামাতে সালাত আদায় করলে ২৭ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা সকল ফরজ নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে সালাত আদায় করেছেন। তাই আমরাও চেষ্টা করব সর্বদা জামাতে সালাত আদায় করার।

জামাতে সালাত আদায়ের উপকারিতা

জামাতে সালাত আদায় করার উপকারিতা অনেক আমরা যদি জামাতে সালাদ আদায় করি তাহলে আমাদের গরিব ধনির পার্থক্য ও ভেদাভেদ কমে আসবে। কারণ মসজিদে জামাতে কোন ব্যক্তির জন্য জায়গা বরাদ্দ থাকে না। এখানে সকল ব্যক্তির সমান কারণ আমরা সকলেই আল্লাহর গোলাম ও বান্দা। এবং জামাতের সালাত আদায় করলে 27 গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। এছাড়াও নিজেদের মধ্যে একতা বাড়ে।

আরো পড়ুনঃ আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানেন

সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পাই - কিছু মন্তব্য

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পরে সালাত আদায় করলে আমরা কি কি সুফল পায় তা নিশ্চয়ই বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এছাড়াও সালাত কেন আদায় করতে হয় সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন কেননা আমরা এই সকল সম্পর্ক ছাড়া আরও সালাতের অনেক সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। আপনি চাইলে আমাদের এই আর্টিকেল থেকে সালাতের বিষয়ে এগুলো জেনে আপনাদের নিজেদের জীবনকে পরিবর্তন করতে পারেন এবং নিজেদেরকে সকল পাপ ও পাপাচার কাছ থেকে ফিরিয়ে এনে ভালো কাজে লিপ্ত করতে পারেন। এছাড়াও আপনি একজন প্রকৃত মুমিন বান্দা হওয়ার জন্য কি কি আমল করা দরকার সেই সকল বিষয়ে আমরা আজ বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরাবি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url