জীবনে কতবার হজ করা ফরজ - ওমরার ফরজ কয়টি

প্রিয় পাঠক, আপনারা কি জীবনে কতবার হজ করা ফরজ এবং ওমরার ফরজ কয়টি জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আর চিন্তা নেই, এই আর্টিকেল থেকে জীবনে কতবার হজ করা ফরজ ও ওমরার ফরজ কয়টি এবং হজ্জ কার উপর ফরজ সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই চলুন দেরি না করে জীবনে কতবার হজ করা ফরজ এবং ওমরার ফরজ কয়টি বিস্তারিত জেনে নিন।
জীবনে কতবার হজ করা ফরজ - ওমরার ফরজ কয়টি
আমরা অনেকেই হজ করতে চাই কিন্তু আমরা হজ সম্পর্কে জানিনা। তাই এই আর্টিকেল থেকে আমরা জীবনে কতবার হজ করা ফরজ এবং ওমরার ফরজ কয়টি এবং আরো হ্জ সম্পর্কে জানতে পারবো।

পোস্ট সূচিপত্রঃ জীবনে কতবার হজ করা ফরজ - ওমরার ফরজ কয়টি


হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি

হজের ফরজ তিনটি এবং হজের ওয়াজিব হচ্ছে নয়টি।

হজের ফরজ তিনটি যেমন,

  • ইহরামের জন্য ইচ্ছা করা বা নিয়ত করা।
  • নয় জিলহজ যোহরের আজানের সময় থেকে ১০ এ জিলহজ ফজরের আগ পর্যন্ত কিছু সময় আরাফার ময়দানে অবস্থান করা।
  • দশ জিলহজ ফজরের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত যেকোনো সময়ে কাবাঘরকে সাতবার প্রদর্শন করা।

হজের ওয়াজিব নয়টি। যেমন,

  • মাথার চুল কাটা
  • কোরবানি দেওয়া
  • পাথর নিক্ষেপ করা
  • নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কবর জিয়ারত করা
  • বিদায়ী তাওয়াফ করা
  • মিনায় কমপক্ষে দুই রাত অবস্থান করা।
  • আরাফার ময়দান থেকে মিনায় মুজদালিফায় ১০ জিলহজ ফজরের পর থেকে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত কিছু সময় এই মূলদালিফায় অবস্থান করা।
  • সাফা ৭ বার সায়ী করা।
  • মুজদালিফায় রাতে অবস্থান করা।

হজ্জের ফরজ কয়টি ও কি কি

হজের ফরজ হচ্ছে তিনটি যেমন,

  • ইহরাম বাধা।
  • আরাফার ময়দানে অবস্থান করা।
  • কাবা ঘর অর্থাৎ আল্লাহর ঘর জিয়ারত করার।

ওমরার ফজিলত | জীবনে কতবার হজ করা ফরজ - ওমরার ফরজ কয়টি

মাসুদ রাদিয়াল্লাহুতায়লা আনহু এর দ্বারা বর্ণিত, আমাদের প্রিয় বিশ্বনবী জানাবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন হজ তোমাদের সকল পাপ, দারিদ্রতার বিবেচনা, অভাব দূর করে দেয়। হাপরের আগুন যেভাবে সোনা, লোহা, তামা ও রুপার থেকে ময়লা দূর করে দেয়।(সূরা তিরমিজি ৮১০)। তাই আমরা যদি আমাদের জীবনের সকল গুনাহ খাতা মুছে ফেলতে চাই তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই করতে হবে।

এছাড়া যদি আমরা আমাদের জীবনের অভাব ও দারিদ্রতা এবং দারিদ্রতার বিবেচনা দূর করতে চাই সেজন্য আমরা হজ করব। এবং মহান আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী জীবনকে পরিচালিত করব। এর ফলে পাব পরকালে শুধু জান্নাত।

হজ্জ না করার শাস্তি

সূরা তিরমিজি ১৬৭ নাম্বার আয়াত থেকে , নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যার উপর হজ করা ফরজ হয়েছে সে যদি হজ না করে মৃত্যুবরণ করে তার মৃত্যু খ্রিস্টান বা ইহুদীর মৃত্যুর সমতুল্য। স্বাগত না থাকার পরও আপনি যদি হজ না করেন তাহলে আপনার পরিণাম কবরে খুবই ভয়াবহ হবে। হজ ফরজ হওয়া সত্ত্বেও যদি হয় না পারে তাহলে তার কবরে আজাব হবে এবং পরকালে অনেক শাস্তি ভোগ করবে।

সেকালেও শান্তি পাবে না এবং পরকালেও শান্তি লাভ করতে পারবে না। পরকালে সে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হয়ে জাহান্নামের অধিবাসী হবে। জাহান্নামের সকল আযান তার উপরে করা হবে।

জীবনে কতবার হজ করা ফরজ

আপনারা যারা জীবনে কোনদিন হজ করেননি হজ করতে চাচ্ছেন, কিন্তু জানেন না যে জীবনে কতবার হজ করা ফরজ। যারা হজ করতে চাচ্ছেন বা হজ করতে ইচ্ছুক তাদের অবশ্যই জানা উচিত যে জীবনে কতবার হজ করা ফরজ। আপনারা যদি জানতে চান জীবনে কতবার হজ করা ফরজ তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

আপনি যদি একাধিকবার হজ করতে চান, হয় যদি আপনার সামর্থ্য থাকে তাহলে আপনি একাধিকবার হজ করতে পারেন। কিন্তু এখন আপনার প্রশ্ন হচ্ছে যে জীবনে কতবার হজ করা ফরজ। বুখারী মুসলিমের ১৩৩৭ নম্বর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে আমাদের উপরে হজ ফরজ তখন এক সাহাবী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন আমরা কি প্রতি বছর হজ করব, প্রতি বছর হজ করা কি আমাদের জন্য ফরজ।

আরো পড়ুনঃ রাজশাহী দর্শনীয় স্থান এবং একদিনের রাজশাহী ভ্রমণ

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বললেন প্রতিবছর তোমাদের ওপর যদি হজ ফরজ করা হয় তাহলে তা তোমরা করতে পারবে না। এবং হজ করার সামর্থ্য তোমাদের হবে না। এ থেকে বোঝা যায় যে জীবনে একবার হাত ধরা ফরজ। তাই আমরা সকলে চেষ্টা করব যে জীবনে একবার হলেও ভয়েস করার ।

ওমরার ফরজ কয়টি

ওমরা হজের ফরজ তিনটি। যেমন, ইহরাম বাধা, কাবাঘর জিয়ারত করা, সাফা ও মারওয়া সায়ী করা।

হজ্জ কার উপর ফরজ

পাঁচটি শর্ত দেখা দিলে তার ওপর হজ ফরজ। এই পাঁচটি শর্ত হচ্ছে,

  • ইসলামকে বিশ্বাস করে মুসলিম হতে হবে।
  • পাগল হওয়া যাবে না। বিবেক থাকতে হবে।
  • প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে।
  • গোলাম বা দাস হওয়া যাবেনা।
  • আর্থিক সামর্থ্য থাকতে হবে।

উপরে এই পাঁচটি শর্ত যার রয়েছে তার ওপরে হয় ফরজ। যার এই সামর্থ্য গুলো নেই তার উপরে হজ ফরজ নয়।

আমাদের জীবনে সংসারে এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রয়োজনীয় জিনিসপাতি খরচ বাদে হজের প্রয়োজনীয় পরিমাণে টা হজ করার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবেকা যদি জমা হয় বা থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই হজ করতে হবে। কারণ তার ওপরে হজ্ব ফরজ হয়েছে।

হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি

হজ ফরজ হওয়ার শর্ত হচ্ছে পাঁচটি। যেমন,

  • হজ করার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে।
  • স্বাধীন হওয়া কারো গোলামী বা দাস হওয়া যাবেনা।
  • বিবেকবান হওয়া অর্থাৎ পাগল হলে হবে না।
  • আল্লাহর সকল বিধান ও আল্লাহর নবীকে মেনে মুসলমান হতে হবে।
  • হজ করার জন্য হালাল অর্থের সামর্থ্য থাকতে হবে

ওমরা করলে কি হজ্জ ফরজ হয়

মূলত ওমরাহ করলে হয় ফরজ হয়ে যায় না। কেননা কারাঘর দেখলেই তার ওপর হজ ফরজ হয়ে যায় এই কথা কোন কিতাব বা হাদিসে উল্লেখিত নেই। তাই ওমরা করলে তার ওপরে হজ ফরজ নয়। তবে যদি সে হজের সময় মক্কা বা মসজিদে হারামে উপস্থিত থাকে তাহলে তার উপরে হজ ফরজ হয়ে যাবে।

ওমরা হজ্জ কত দিন | জীবনে কতবার হজ করা ফরজ - ওমরার ফরজ কয়টি

ওমরা হজের জন্য সাধারণত দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে। আর যাওয়া আসা মিলে কমপক্ষে সর্বমোট সাত দিন সময় লাগে।

শেষ কথা | জীবনে কতবার হজ করা ফরজ - ওমরার ফরজ কয়টি

প্রিয় পাঠক আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে জীবনে কতবার হজ করা ফরজ এবং ওমরার ফরজ কয়টি এবং হজ্জ কার উপর ফরজ তা আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে আপনাদেরকে এই তথ্যগুলো জেনে রাখা উচিত। এমন কি আপনারা যদি হজ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই বিষয়গুলোতে জ্ঞান থাকতে হবে। তাহলে কথা না বাড়িয়ে এখানে শেষ করছি দেখা হবে পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে।

আরো পড়ুনঃ ঢাকার দশটি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানাবেন

ততক্ষণ ভালো থাকবেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে আমরা আমাদের মূল লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি এবং আপনাদের জন্য নিত্য নতুন মানসম্মত আর্টিকেল নিয়ে হাজির হতে পারি। হজের সম্পর্কে এবং জীবনে কতবার হজ করা ফরজ ও ওমরার ফরজ কয়টি এই সকল সম্পর্কে জরি বুঝতে আপনাদের কোন অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে রাখবেন। আমরা চেষ্টা করব খুব শীঘ্রই আপনার সমস্যার সমাধান দেওয়ার।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরাবি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url