আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা

প্রিয় পাঠক, আপনারা কি আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন কেননা আজ আমরা আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা এবং আল আকসা মসজিদের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেছি। তাহলে চলুন দেরি না করে আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা জেনে নেই।
আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা
আল আকসা মসজিদ মুসলমানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ভবিষ্যতে মুসলমানদের জন্য এই মসজিদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কে জানা উচিত। তাই চলুন আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা জেনে নেই

পোস্ট সূচিপত্রঃ আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা

ভূমিকা - আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা

আল আকসা মসজিদকে ফিরে রয়েছে অনেক নবী-রাসূলগণের ইতিহাস। এমনকি আমাদের প্রিয় নবী বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মসজিদ থেকে শবে মেরাজের যাত্রা শুরু করেছেন। এছাড়া অনেক নবী রাসূলের কাহিনী সংগঠিত রয়েছে এই মসজিদের সঙ্গে। তাই আমাদের প্রত্যেকটি মুসলমানের আল-আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানা উচিত। আপনারা যদি আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেল টিম মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

আরো পড়ুনঃ পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় জানুন

আপনারা যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন তাহলে আর আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা ছাড়াও আল-আকসা মসজিদের গুরুত্ব এবং আল আকসা মসজিদ নিয়ে হাদিস সম্পর্কেও নানান তথ্য জানতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জেনে নেই।

আল আকসা মসজিদের গুরুত্ব

সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে কাবা ঘরের পরে আল-আকসা মসজিদের গুরুত্ব অপরিহার্য। পৃথিবীর বরকতময় স্মৃতি বিরাজমান প্রাচীনতম জেরুজালেম শহরে অবস্থিত রয়েছে মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল-আকসা। পৃথিবীর বুকে মুসলিম জাতির প্রথম কেবলা হচ্ছে এটি।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন কাহিনী গুলো ইসলামের ইতিহাসে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হল শবে মেরাজ। আমাদের প্রিয় হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মেরাজ হচ্ছে অন্যতম একটি বড় মোজেজা। আর এই শবে মেরাজ ফিলিস্তিনের বুকের আল-আকসা মসজিদ থেকেই ঘটনাটি শুরু হয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ সেই রাতে সর্বপ্রথম মসজিদে ভ্রমণ করেন এবং এরপর বায়তুল থেকে তিনি আকাশের দিকে গমন করেন।

জেরুজালেম শহরের এই আকসা মসজিদ হল আমাদের অর্থাৎ মুসলমানদের প্রথম কেবলা। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ও তার অনুসারীরা বায়তুল মাকদিস এর মুখ করে সালাত আদায় করতেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদের নিয়ে বনুসালাম আইনের জোহর এবং আসরের নামাজ আদায় করেন দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাকাতের মাঝখানের সময়ে মহান আল্লাহতালার আদেশে আমাদের প্রিয় নবী ও তার সাহাবা চার রাকাতের অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ কাবার মুখ হয়ে আদায় করেন এজন্য কিবলার মসজিদ হিসেবে সম্মানিত করা হয়। মদিনায় হিজরতের পর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায় ১৬ মাস ধরে সেদিকে ফিরেই নামাজ আদায় করেন অতঃপর কাবার দিকে মুসলমানদের কিবলা পরিবর্তন হয়।

আরো পড়ুনঃ অতিরিক্ত টেনশন করলে কি ক্ষতি হয় জানুন

এই মসজিদে শুধু মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর স্মৃতি জড়িয়ে নেই স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই মসজিদের সঙ্গে মুসলিম জাহানের প্রথম মহান শাসক সুলেমান আলাইহি সাল্লাম। তিনি একজন নবুয়তপ্রাপ্ত আল্লাহর নবী ছিলেন। তিনি সর্বপ্রথম এই আল আকসা মসজিদটি তৈরি করেন। তারপরে হযরত মুসা আলাই সাল্লাম এর জীবনের অনেক চরিত্র ও চলাফেরার পথের অনেক বিষয়গুলো জড়িত রয়েছে এই আল আকসা মসজিদের সঙ্গে।

এবং আল আকসা মসজিদ বিবি মরিয়ম এর জীবনের সকল চারিত্রিক বিষয়গুলোর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এই মসজিদে বসবাস করেছেন বিবি মরিয়ম এবং তিনি জান্নাতি খাবার পেয়েছেন এই মসজিদ থেকে তার আল্লাহর নৈকট্যবাদী চরিত্রের মাধ্যমে। এছাড়াও হযরত ঈসা নবীর জীবনের সকল চরিত্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে আল আকসা মসজিদ। এজন্য আল আকসা মসজিদের গুরুত্ব অপরিসীম।

আল আকসা মসজিদ কোন দেশে অবস্থিত

আল আকসা মসজিদ ফিলিস্তিনের জেরুজালেম শহরে অবস্থিত। এই মসজিদের পূর্ণ কাজ প্রথম করেন হযরত সুলাইমান আলাই সাল্লাম এবং পরবর্তীতে হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম এর পূর্ণ নির্মাণ করেন। কাবা শরীফ নির্মাণের পর হযরত ইব্রাহিম আলাই সালাম এর নাতি হযরত ইয়াকুব আলাইহি ওয়াসাল্লাম জেরুজালেম শহরে এই মসজিদটি প্রসিদ্ধ করে স্থাপন করেন।

আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা

আল আকসা মসজিদ হচ্ছে মুসলমানদের প্রথম কাবা। এবং এ আল আকসা মসজিদে ঘিরে রয়েছে অনেক নবী রাসূলের স্মৃতি এছাড়াও অনেক নবী রাসূলের কবর রয়েছে এই মসজিদে। এজন্য এই মসজিদে মুসলমানের কাছে এতই প্রিয়। বর্তমানে ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল নামক দেশ তাদের ওপর অনেক অন্যায় ও অত্যাচার করে যাচ্ছেন। ১৯৫০ সালের আগে ইসরাইল নামক কোন দেশ ছিল না। এরা ফিলিস্তিনের ভেতরে কিছু জায়গা দখল করে বসবাস করতে শুরু করেছিল।

এবং ধীরে ধীরে এরা ফিলিস্তিনদের জায়গা দখল করতে করতে একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে এবং তারা এখন ফিলিস্তিনের গাজা নামক দেশে এবং তাদের অর্থাৎ মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ এবং মুসলমানদের প্রথম কাবা ঘর আল আকসা মসজিদ বন্ধ করে তাদের অধীনে রেখেছে। বর্তমানে তারা মুসলমানদের ওপর অনেক অন্যায় ও অত্যাচার এবং নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছে। এদের রুখে দাঁড়াতে এবং এদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে বর্তমানে ফিলিস্তিনরাই হয়ে গেছে এখন খারাপ।

ইসরায়েলদের রুখতে এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তারা সকলে মাথা চেড়ে  দাঁড়িয়েছে এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে তারা তাদের প্রথম কাবা এবং তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ আল-আকসা দখল করে নিয়েছে ইসরায়েলদের হাত থেকে। এবং বর্তমানে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল এদের ভেতরে বর্তমানে যুদ্ধ চলছে। এবং ইসরায়েল রাষ্ট্র ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য পারমাণবিক বোমা এবং তাদের সশস্ত্র দিয়ে ফিলিস্তিনের উপর হামলা করে যাচ্ছে।

আরো পড়ুনঃ শীতকালীন সবজি চাষের পদ্ধতি জানুন

এ সময় আমাদের প্রত্যেকটি মুসলমান দেশের উচিত ফিলিস্তিন দেশের সাহায্য করা। এবং ইসরাইয়েল নামক দেশকে একেবারে জন্য মুছে ফেলা। ইহুদি নামুক সেই দেশটিকে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়ে একেবারে জন্য নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই আকসা মসজিদ অর্থাৎ আমাদের মুসলিম জাতির প্রথম কাবা ঘরকে রক্ষা করার জন্য আমাদের মুসলিম রাষ্ট্রের কোন দেশের সরকার এই পর্যন্ত তাদের পক্ষে গিয়ে দাঁড়ায়নি। এটি একটি দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের উচিত ছিল ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রথম কাবা আল আকসা কে রক্ষা করা এবং ফিলিস্তিন দেশের জনগণকে রক্ষা করা। প্রতিটি মুসলমান দেশের যা যা সামর্থ্য রয়েছে তা দিয়ে ফিলিস্তিন দেশকে সহযোগিতা করা উচিত।

আল আকসা মসজিদ নিয়ে হাদিস - আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা

মুসলমানদের মক্কা এবং মদিনার পরে আল আকসা মসজিদ হয়েছে তৃতীয় পবিত্র মসজিদ। কোরআনে আল আকসা সম্পর্কে যে বৈশিষ্ট্য গুলো রয়েছে তা হচ্ছে আল-আকসা এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ব্যাপারে অনেক তথ্য রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে

পবিত্র ভূমি

মহানরাব্বুল আলামিন কোরআনে বলেছেন যে আল-আকসা এবং এর আশেপাশের অঞ্চলগুলো পবিত্র ভূমি।ইরশাদ করেছেন এই পবিত্র ভূমি তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট করেছেন তাতে প্রবেশ কর তোমরা। এবং এই নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে পশ্চাদপসরণ করোনা। এর ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (সূরা মায়দা আয়াত;২১)

এই আয়াতে যে পবিত্র ভূমির কথা বলা হয়েছে সেটি হচ্ছে বায়তুল মুকাদ্দাস কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। এবং সেখানে প্রবেশের কথা বলতে বনি ইসরাইলকে প্রবেশ করার কথা বলা হয়েছিল।

আরো পড়ুনঃ শীতে শুষ্ক ত্বকের যত্নে ১৫ টি ঘরোয়া উপায় জানুন

এবং এই আকসা এবং আল আকসার হচ্ছে বরকত ময়ভূমি। মহান আল্লাহতালা মসজিদুল আল-আকসা সহ জেরুজালেম অর্থাৎ ফিলিস্তিনের ভূমিগুলোকে বরকতময় করেছেন। এছাড়াও এ আল আকসা মসজিদের সঙ্গে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। এবং একে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর স্মৃতিধন্য ভূমি বলা হয়। কারণ মহান আল্লাহতালা তার প্রিয় বান্দা এবং প্রিয় নবীকে  মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়ে তিনি তার নিকট শেষ আসমানে বোরাকের মাধ্যমে নিয়ে গেছেন।

এছাড়া মহান আল্লাহ তা'আলা ফিলিস্তিনকে কল্যাণময় করেছেন এবং বলেছেন কল্যাণময় রাজ্য ও রাজত্বের ভূমি হচ্ছে এই ফিলিস্তিন অর্থাৎ আল-আকসা ও আলআকসার আশপাশের অঞ্চল।

আল আকসা মসজিদে নামাজের সওয়াব

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি ঘরে নামাজ পড়ে সে একটি নেকি পান। এবং যে ব্যক্তি প্রতি ওয়াক্ত মসজিদে নামাজ পড়ে প্রতি ওয়াক্তে এসে ২৫ গুণ সব পায় এবং জুম্মার নামাজ মসজিদে পড়লে ৫০০ গুণ এবং মসজিদে আকসায় পড়লে ৫০ হাজার গুণ সব পাওয়া যায় ও মসজিদে নববীতে পড়লে ৫০ হাজার গুণ এছাড়াও মসজিদুল হারাম বা কাবা ঘরে সালাত আদায় করলে ১ লক্ষ গুন সওয়াব পাওয়া যায়।

শেষ কথা - আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা

প্রাণপ্রিয় ভিজিটর আপনাদের সকল মুসলমানদের প্রত্যেকটি মুসলমান দেশ এবং জাতি ও জনগণের প্রতি খোঁজ নেওয়া আমাদের কর্তব্য। এ আল আকসা এমন একটি মসজিদ যে মসজিদে রয়েছে আমাদের প্রিয় বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনেক কাহিনী। এবং হযরত সুলাইমান আলাই সাল্লাম হযরত মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং বিবি মরিয়ম ও তার পুত্র হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম এর সকল জীবনের অতীতের কাহিনী জড়িত রয়েছে এই আল আকসা মসজিদের সঙ্গে।

আরো পড়ুনঃ নিম পাতার ২০টি উপকারিতা জানুন

এজন্য আমাদের প্রত্যেকটি মুসলমানের উচিত আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানা এবং আল আকসা মসজিদের ওপর অনেক কাফের ও মুশরিকদের খারাপ নজর পড়তে শুরু করেছে। আমাদের প্রত্যেকটি মুসলমানের উচিত আল আকসা মসজিদের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা রাখা। আপনাদের যদি আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আরো কোন তথ্য জানা থাকে। তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরাবি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url