মেয়েদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম - ইসলামে কোন রং নিষিদ্ধ
পোস্ট সূচিপত্রঃ মেয়েদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম - ইসলামে কোন রং নিষিদ্ধ
- সূচনা
- মেয়েদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম
- ইসলামে কোন রং নিষিদ্ধ
- ছেলেদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম
- কালো পোশাক পরা কি জায়েয
- পুরুষের জন্য হারাম পোশাক
- হলুদ রঙের পোশাক কেন হারাম
- উপসংহার
সূচনা
প্রাণপ্রিয় ভিজিটর আপনারা আজকে অবশ্যই ইসলামে কোন রং নিষিদ্ধ এবং ইসলামে
মেয়েদের কোন ধরনের ও কোন রঙের পোশাক পড়া হারাম বলা হয়েছে এই সম্পর্কে জানতে
আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাই আপনাদের জন্য আজকে আমরা এই আর্টিকেলে এই সম্পর্কে
পুরোপুরি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। তাই চলুন দেরি না করে এবং কথা না বাড়িয়ে
আমরা জেনে নেই মেয়েদের কোন রং এর পোশাক পরা হারাম এবং ইসলামের কোন রং নিষিদ্ধ
নারীদের জন্য।
মেয়েদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আপনারা অবশ্যই জানতে চাচ্ছেন মেয়েদের কোন রঙের পোশাক পরা
হারাম। আসলে মেয়েদের কোন রঙের পোশাক পড়া হারাম নয়। তবে তাকে পদ্মা হওয়ার জন্য
নিজের সৌন্দর্যকে ঢেকে রাখার জন্য ভালো পোশাক পরিধান করতে হবে এবং যেকোন রঙের
পোশাক ব্যবহার করতে পারেন। তবে আপনি যখন ঘর থেকে বাহিরে বের হবেন যেই রং এর পোশাক
ব্যবহার করে আপনাকে অনেক বেশি সৌন্দর্য ও আকৃষ্ট দেখাবে সেই রঙের পোশাক আপনাকে
ব্যবহার করা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ ইসলামে পুরুষের পোশাকের বিধান সম্পর্কে জেনে নিন
এক হাদীসে এসেছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লাল ও হলুদ
রঙের ও রেশমি এবং স্বর্ণযুক্ত পোশাক পরা পুরুষদের জন্য সম্পূর্ণ হারাম। তবে
মেয়েদের জন্য তা নিষিদ্ধ করা হয়নি এগুলো তাদের জন্য বৈধ। মেয়েরা শুধু বিভিন্ন
ধরনের পোশাক ব্যবহার করে বিভিন্ন রঙের পোশাক ব্যবহার করে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে
এবং নিজের সতরকে সম্পূর্ণরূপে ঢেকে রাখতে পারবে। তাই এ থেকে বোঝা যায় যে
মেয়েদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম নেই তারা সকল ধরনের রং এর পোশাক ব্যবহার করতে
পারবে।
কিন্তু তাদেরকে অবশ্যই এমন রং ব্যবহার করা যাবে না যে পোশাকের রঙে তাকে বেশি
আকৃষ্ট সৌন্দর্য এবং পরপুরুষের চোখ কেড়ে নিতে পারে এমন পোশাক পরিধান করা যাবে
না। এবং মাথা থেকে পায়ের তালু পর্যন্ত ঢেকে রাখার মত এমন পোশাক ব্যবহার করতে
হবে। এবং যেই রঙেরই পোশাক পড়ুক না কেন সেই পোশাকটি চিপা হওয়া যাবে না সেই
পোশাকগুলো সব সময় ঢিলাঢালা হতে হবে।
ইসলামে কোন রং নিষিদ্ধ
ইসলাম সাধারণত হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে দুই রংয়ের ওপর নিষিদ্ধ এসেছে যে
রংয়ের পোশাক সাধারণত পুরুষেরা পড়তে পারবে না এগুলো শুধুমাত্র মহিলারাই পড়তে
পারবে এক হাদীস শরীফে আছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম একদিন এক হাতে
রেশমি ও একহাতে স্বর্ণ নিয়ে বলেন যে এই দুটি জিনিসই আমার উম্মতের মধ্যে পুরুষদের
জন্য হারাম। এবং এর সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি হাদিসে এসেছে যে একজন সাহাবী লাল ও হলুদ
রঙের পোশাক পরিধান করে এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেন এই রং এর
পোশাক গুলো হচ্ছে কাফেরদের পোশাক।
আরো পড়ুনঃ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে ও এর সুবিধা সম্পর্কে জানুন
অর্থাৎ আমাদের প্রত্যেকটি মুসলমান ভাইদের কে এই চার ধরনের জিনিস থেকে অর্থাৎ লাল
ও হলুদ রঙের পোশাক এবং রেশমি কাপড় ও স্বর্ণযুক্ত কাপড় পোশাক থেকে বিরত থাকতে
হবে। তাহলে আপনি আপনার জীবন এর পথকে কোরআনুল কারিমের দ্বারা পরিচালনা করতে
পারবেন।
ছেলেদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম
আপনারা যদি আমাদের এই আর্টিকেলের উপরের অংশ ভালোভাবে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই
আপনার ছেলেদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম ও ইসলামের নিষিদ্ধ তা অবশ্যই জেনেছেন।
আপনাদের সুবিধার্থে উপরে আলোচনা করা সত্ত্বেও এখানে জানাবো যে ছেলেদের কোন রঙের
পোশাক পরা হারাম। আমরা অনেকেই নানান ধরনের হাদিস কারা নিয়ে বিভিন্নভাবে নিজেরা
মুসলমানরা ভাগাভাগি হয়ে গেছে। এটা আসলে আমাদের উচিত নয় আমাদের জানতে হবে যে নবী
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তার জীবনকে কিভাবে পরিচালনা করেছেন তার দিকে
লক্ষ্য দিতে হবে এবং তাকে অনুসরণ করে চলতে হবে।
কারণ কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেছেন তোমরা সকলে মোহাম্মদের চরিত্র কে
অনুসরণ কর কারণ তার স্বভাব ও চরিত্র এবং চলাফেরা সর্বোত্তম। এবং তোমরা যদি আমাকে
ভালবাসতে চাও এবং আমাকে সন্তুষ্টি করতে চাও তাহলে তার কথা মেনে চলো তার সকল
চরিত্রের অনুসরণ করো। তাই আমাদেরকে সকল বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। একদিন এক সাহাবী
লাল ও হলুদ রঙের পোশাক পরে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে
দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম তাকে দেখে তার মুখ
ভারী হয়ে যায়। এবং চেহারার আকৃতি বদলে যায়।
এছাড়াও আরও একটি হাদিসে পাওয়া যায় যে একজন সাহাবী লাল ও হলুদ রংয়ের পোশাক
পরিধান করে এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম তা দেখে তাকে বলেন যে এই
পোশাকগুলো হচ্ছে কাফেরদের পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। তাই আমাদেরকে এই পোশাক পরিধান করা
থেকে বিরত থাকতে হবে।
কালো পোশাক পরা কি জায়েয
লাল ও হলুদ এবং রেশমি ও স্বর্ণযুক্ত কাপড় ছাড়া কোন পোশাক পড়া হারাম নয় সকল
পোশাক পরাই জায়েজ। অর্থাৎ কালো রঙের পোশাকও জায়েজ। কিন্তু কালো রংয়ের পোশাক
হচ্ছে শোক ও বেদনার আলামতের পোশাক। এছাড়া কোন সমস্যা নেই কালো পোশাক পরিধান
করলে। কালো পোশাক পরিধান করলে আপনাকে যদি সৌন্দর্য দেখায় এবং আপনার যদি মন টানে
তাহলে আপনি কালো পোশাক করতে পারেন কোন সমস্যা নেই কারণ কালো পোশাক পরিধান করা সকল
নর ও নারীদের জন্য জায়েজ।
পুরুষের জন্য হারাম পোশাক
- রেশমির পোশাক পরিধান করা পুরুষদের জন্য হারাম।
- স্বর্ণযুক্ত পোশাক পরিধান করা পুরুষদের জন্য হারাম।
- লাল ও হলুদ রঙের পোশাক পরা নিষিদ্ধ।
- পায়ের তালুর গিরার নিচে পোশাক পরা পুরুষদের জন্য হারাম।
- সতর না ঢেকে পোশাক পরিধান করা পুরুষদের জন্য হারাম।
হলুদ রঙের পোশাক কেন হারাম
আপনারা সকলে হয়তো ভাবছেন যে হলুদ রঙের পোশাক কেন পুরুষদের জন্য হারাম।
কারণ হাদিসে এসেছে যে একজন সাহাবীর লাল ও হলুদ রঙের পোশাক পরিধান করে এবং
নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম তা দেখে তাকে বলে যে তুমি যেই বস্ত্রগুলো পরিধান
করেছো এই বস্ত্র কাফেরদের বস্ত্র ইহা গুলোকে তুমি পড়বে না অর্থাৎ এগুলোকে পরিহার
কর। আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য এবং আল্লাহর নিকটবর্তী ও জান্নাতি অধিবাসী হওয়ার
জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর সকল কথা এবং তার জীবন এর চলাফেরার
পথের আচার-আচরণ অনুসরণ করে চলতে হবে ও মেনে চলতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের সুন্নতি ও ফরজ পোশাক সম্পর্কে জানুন
তিনি হলেন আমাদের মুক্তির প্রতীক। তিনি যে কাজগুলো করতে বলবেন সেই কাজ আমাদের
জন্য সুন্নত অথবা ফরজ হয়ে যায় আর যে কাজগুলো নিষিদ্ধ করেন সেই কাজ করা আমাদের
জন্য হারাম হয়ে যায়। কারণ তিনি কখনো মনগড়া কথা বলেন না তিনি যে সকল কথাগুলো
বলে থাকেন সেই সকল কথাগুলো হচ্ছে মহান রাব্বুল আলামিনের নির্দেশেই বলেন। অতএব
আমরা সেজন্যই ধরতে পারি যে যেহেতু নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম হলুদ পোশাক
ও লাল পোশাককে পড়তে নিষেধ করেছেন এটি আমাদের জন্য হারাম।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক আশা করা যায় যে আপনারা এতক্ষণে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
পড়ে মেয়েদের কোন রঙের পোশাক পরা হারাম ও ইসলামে কোন রং নিষিদ্ধ তা
বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন এবং তা আপনাদের জীবনে ঘটে থাকলে খুব দ্রুত পরিহার
করবেন। কারণ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য ও আল্লাহ তায়লার জান্নাতে
পৌঁছানোর জন্য তার প্রেরিত নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সকল কথা আমাদেরকে মেনে চলতে হবে। কারণ তিনি হলেন মানবজাতির পথপ্রদর্শক। তাহলে
প্রিয় পাঠক আর কথা না বাড়ি এখানে শেষ করছি দেখা হবে পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে।
এতক্ষণ যাবৎ আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ।
আরাবি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url