মেয়েদের সুন্নতি পোশাক - ইসলামে পুরুষের পোশাকের বিধান
পোস্ট সূচীপত্রঃ মেয়েদের সুন্নতি পোশাক - ইসলামে পুরুষের পোশাকের বিধান
সূচনা
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা আজকে অবশ্যই মেয়েদেরকে কোন পোশাক পরিধান করা উচিত ফরজ
পোশাক মেয়েদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা অবশ্যই জানতে চাচ্ছেন এবং ইসলামে
পুরুষদের পোশাকের বিধান কতটা কঠোর ও তাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও কতটা অবদান
রাখে তা জানতে আগ্রহী হয়েছেন। এই বিষয়গুলো জানার জন্য আপনাকে অবশ্যই আমাদের এই
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি এ বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে বুঝতে
পারবেন ও নিজের ভেতরে একটি ধারণা নিতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই
ইসলামে পোশাকের বিধানগুলো কেমন ও মেয়েদের ফরজ ও সুন্নত পোশাক কেমন ও কতটা
গুরুত্বপূর্ণ।
মেয়েদের সুন্নতি পোশাক
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আপনারা জানতে চেয়েছেন মেয়েদের সুন্নতি পোশাক সম্পর্কে আসলে মেয়েদের সুন্নতি পোশাক বলতে যেটা বোঝায় সেটা হচ্ছে মেয়েদের ফরজি পোশাক। কারণ সুন্নতি পোশাক বলতে কোন কিছুকে বোঝানো যায় না। পোশাক একটাই রয়েছে সেটা হচ্ছে ফরজ পোশাক। মেয়েদের ফরজি পোশাক সম্পর্কে মহান রাব্বুল আলামিন কোরানে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। যে নারী তার ফরজি পোশাক বাদ দিয়ে অন্য কোন পোশাক পরিধান করবে ফরজিত পোশাকে অবহেলা করবে সে নারী অবশ্যই জাহান্নামে অন্তর্ভুক্ত হবে।
আরো পড়ুনঃ পুরুষদের জন্য খেজুর ও কিসমিস কতটা উপকারী জানুন
তাই অবশ্যই এই জাহান্নামী আজাব থেকে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহতালা কুরআনে ঠিক
যেভাবে ফরজি পোশাক সম্পর্কে নারীদের পরিধান করতে বলেছেন এবং বাহিরে গেলে ঠিক
যেভাবে পোশাক পরিধান করে চলাফেরা করতে বলেছেন ঠিক সেভাবে তাকে চলাফেরা করতে হবে।
তাহলে সে জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তি পাবে এবং অনেকটা নাজাত পেয়ে যাবে। আসলে
মেয়েদের ফরজি পোশাক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারণ ইসলামে যারা বিধি-বিধান মেনে
চলেন তারা অবশ্যই জানেন যে ফরজ মানেই বাধ্যতামূলক। যে জিনিসটি অবশ্যই আপনাকে
কবরের আজাব থেকে বাঁচার জন্য এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য পালন
করতে হয়।
ফরজি পোশাক বলতে আপনার শরীরটা সম্পূর্ণ ঢাকা থাকবে এবং ঢিলাঢালা থাকবে যে পোশাক
পরিধান করবেন সেই পোশাক দ্বারা যাতে কোনভাবেই আপনার সৌন্দর্য যাতে না বোঝা যায়
এবং আপনার সৌন্দর্য যাতে না ফুটে ওঠে। এবং আপনার পোশাকটা হতে হবে ঢিলাঢালা। মাথা
থেকে পায়ের টাকনু পর্যন্ত সম্পূর্ণ ঢাকা থাকবে শুধুমাত্র চোখ দুটি ছাড়া।
ফরজি পোশাক পরিধান করলে আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারবেন এবং খারাপ
ব্যক্তির নজর থেকে রক্ষা পাবেন নিজের সৌন্দর্যকে অন্যের আড়াল থেকে ঢেকে রাখতে
পারবেন। যার ফলে আপনার কোন পাপ হবে না। এবং মহান আল্লাহতায়লা আপনার উপরে রহমত
বর্ষিত করবেন ও জান্নাতির অন্তর্ভুক্ত করে দেবেন।
ইসলামী পোশাকের মূলনীতি
প্রত্যেকটি পুরুষ ও নারীকে সৌন্দর্য করতে পোশাকের গুরুত্বপূর্ণ অনেক। মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআনের মধ্যে অনেক সুন্দর ভাবে ইসলামী শরীয়তের অর্থাৎ প্রত্যেকটি মানুষের জন্য পোশাকের ব্যাপারে যৌক্তিক ও মূলনীতি রয়েছে। তবে মহান আল্লাহতালা ইসলামী পোশাকে নির্দিষ্ট ভাবে বলেননি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পোশাক বিভিন্ন হতে পারে সমস্যা নেই। তবে এটি হতে হবে যাতে নিজের সৌন্দর্য ও শরীরকে সঠিকভাবে পদ্মা করা যায় এমন পোশাক। তবে অবশ্যই নারী ও পুরুষের পোশাক ভিন্ন হতে হবে। পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতে হবে। নারী ও পুরুষদের এমন পোশাক পরিধান করতে হবে যাতে সেই পোশাকটি পাতলা না হয় যাতে করে তার শরীর কোনভাবেই বোঝা না যায়। এবং তার সৌন্দর্য যাতে সেই কাপড়ে ফুটেনা ওঠে সেই রকম পোশাক পরিধান করতে হবে।
তবে আপনি আপনার বাড়ির ভেতরে শুধু সতর ঢেকে অন্য পোশাক পরলে সমস্যা নেই। কিন্তু
আপনি যখন বাহিরে বের হবেন তখন আপনাকে মাথা থেকে পায়ের তালু পর্যন্ত সম্পূর্ণ
ঢেকে বের হতে হবে। ওই পোশাকে যাতে করে আপনার অঙ্গ না বোঝা যায় এবং চিপা পোশাক
পরিধান করা যাবে না। ঢিলাঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে। পোশাক ছোট মাপের হওয়া যাবে
না যাতে করে অন্য পর পুরুষ আপনার ওপরে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।
আরো পড়ুনঃ রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন পুরুষেরা রেশমি কাপড় পড়তে পারবে না কারণ তাদের জন্য এটি হারাম। এ সত্ত্বেও যদি কোন ব্যক্তি রেশমি কাপড় পরিধান করে সেই ব্যক্তির কেয়ামতের ময়দানে তার কোন অংশ থাকবে না। কারণ এই ধরনের কাপড় পরিধান করার ফলে তারা কবিরা গুনার অন্তর্ভুক্ত হবে। পুরুষেরা কখনো মহিলাদের পোশাক পরিধান করতে পারবে না কারণ এটি তাদের জন্য হারাম এবং মহিলারা কখনো পুরুষের পোশাক পরিধান করতে পারবে না।
এবং পুরুষকে সব সময় পায়ের গিরার ওপরে পোশাক পরিধান করতে হবে, পায়ের গিরার নিচে
পোশাক পরিধান করা যাবে না। এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন তাদেরকে সবসময় পায়ের
গিটার নিচে পোশাক পরিধান করতে হবে এবং পায়ের উপরে পোশাক পরিধান করা তাদের জন্য
হারাম। মহিলাদের এমন পোশাক পরিহার করতে হবে যে পোশাক পরিধান করার ফলে কোন পুরুষ
তার প্রতি আকর্ষণীয় ও আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।
ইসলামে পুরুষের পোশাকের বিধান
ইসলামে জীবন যাপন করার জন্য কোরআনের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে বিধি-বিধান দেওয়া
রয়েছে। এই বিধি-বিধান কোন মানুষের নয় কোনো নবীর নয় বরং এটি মহান সৃষ্টিকর্তা
মহান রব্বুল আলামীনের দেওয়া বিধি-বিধান। যে ব্যক্তি এই বিধি-বিধান কে অমান্য
করবে সে অবশ্যই কাফের ও মুনাফিক এবং জাহান্নামের অধিবাসী হবে। তাই অবশ্যই
আমাদেরকে এগুলোর হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে মহান আল্লাহর কথা মেনে চলতে হলে কোরআনের
সকল কথা মেনে চলতে হবে। আর কোরআনের ভেতরে ইসলামে নারী ও পুরুষদের পোশাকের বিধানও
কঠোরভাবে দেওয়া হয়েছে।
- পুরুষদের অবশ্যই এমন ধরনের পোশাক পরিধান করতে হবে যাতে তাদের সতর সঠিকভাবে ঢাকা থাকে।
- সতর ঢাকতে ঢাকতে পোশাক এত নিচে নামানো যাবে না যাতে করে তাদের পায়ের গিরা ঢেকে যায়। কারণ পুরুষদের পায়ের গিরার নিচে পোশাক পরিধান করা সম্পূর্ণভাবে হারাম।
- পুরুষদের রেশমি পোশাক পরিধান করা যাবে না। কারণ যে ব্যক্তি রেশমি পোশাক পরিধান করবে কিয়ামতের দিনে সে ব্যক্তির জন্য কোন অংশ থাকবে না।
- পুরুষদেরকে অলংকার যুক্ত পোশাক পরিধান করা যাবে না।
- চিপা পোশাক পরিধান করা যাবে না। কারণ চিপা পোষাক পরিধান করলে তার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে বোঝা যায়। এজন্য ঢিলাঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে।
- এছাড়াও পুরুষকে কোন অবস্থায় মহিলার পোশাক পরিধান করা যাবে না।
- নতুন পোশাক পরিধানের সময় মহান আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এছাড়াও পোশাক পরিধানের সময় ডান দিক দিয়ে পোশাক পরিধান করতে হবে এবং খোলার সময় বাম দিক থেকে খুলতে হবে।
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতে হবে।
- এছাড়াও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা সাধারণের পোশাক বেশি করে পরিধান করো। কারণ সকল রংয়ের পোশাকের থেকে সাদা পোশাক উত্তম। এবং নবী আরো বলেন মৃত ব্যক্তিকে তোমরা সাদা কাফন দিয়ে শায়িত করো।
উপসংহার
প্রাণপ্রিয় ভিজিটর এতক্ষণ যাবৎ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করা যায় যে আপনি আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ে ভালোভাবে
মেয়েদের সুন্নতি পোশাক এবং ইসলামে কিভাবে পুরুষকে পোশাক পড়তে হয় এবং তার
পোশাকের বিধান কি ও মেয়েদের সুন্নতি ও ফরজি পোশাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
পেরেছেন। আপনারা যদি ফরজি পোশাক থেকে বিরত থাকেন তাহলে আপনাদের উচিত হবে খুব
শীঘ্রই মহান আল্লাহতালার কথা মেনে চলা কোরান হাদিসের আলোকে নিজের জীবনকে উৎসাহিত
করা।
আরো পড়ুনঃ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে তা জানুন
এছাড়াও আপনি যখন বাড়ির ও ঘরের বাহিরে যাবেন তখন আপনাকে অবশ্যই আপনার সতর থেকে ও
পর্দাশীল হয়ে বের হতে হবে। তাহলে আপনি তখন ফরজ পোশাকে অন্তর্ভুক্ত হবেন। আর মহান
আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করতে পারবেন এবং জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা
পাবেন।
আরাবি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url